বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত আবিষ্কার AI বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। সময়ের সাথে এতো দ্রুত এটি বিভিন্ন কাজের জায়গা নিয়ে নিচ্ছে যা অনেকটাই চিন্তার বিষয়।
পরবর্তী দশকে AI বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কর্মক্ষেত্রে মানুষের স্থান দখলের পরিমাণ এতো বেশি যে, চ্যাট জিপিটির (Chat GPT) নির্মাতা ওপেন এআই-এর (Open AI) একটি আলাদা ডিপার্টমেন্ট আছে। যেখানে ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম সমাধানের নিয়ে কাজ হয়।
এতে হয়তো অনেকেই চাকরি হারাতে পারে। তবে সুসংবাদ হলো, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত হয়তো আমাদের বাঁচিয়েও দিতে পারে।
এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন, AI-এর কোন ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করে সবচেয়ে বড় সুযোগটা কাজে লাগাতে পারবেন।
AI VS Industrial Revolution
AI টেকনোলজি তৈরি হয়েছে আমাদের সাধারণ জীবনযাপন আর কর্মক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তন নিয়ে আসতে। কিন্তু, প্রতিটি নতুন আবিষ্কার আর উদ্ভাবনের সাথে আসে নতুন সুযোগ।
শিল্প বিপ্লবের সময় মানুষ উন্নত যন্ত্র, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি আর লোকবলের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে ধনী হয়ে ওঠে। ক্রমবর্ধমান এই উন্নতি এবং ব্যবসায়িক সাফল্যের মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্ম উৎপাদনশীল অর্থ আয়ের মাধ্যমে বর্তমান অবস্থানে এসে পৌঁছেছে।
AI-এর সাথেও ঠিক একই বিষয় ঘটছে। তবে মূল পার্থক্য হলো এই পরিবর্তনের গতি। আগের যেকোনো পরিবর্তন থেকে এটি অনেক দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আর তাই এর প্রভাবও হবে তুলনামূলক বেশি।
১৮০০ শতকে পরিবর্তন শুরু হয়েছিল প্রযুক্তির হাত ধরে। ২০২৩ ও ভিন্ন নয়। যারা যত কম সময়ে এর সাথে খাপ খাওয়াতে পারবে, তারাই এগিয়ে যাবে আর বাকিরা তাদের স্থান হারাবে।
Value Arbitrage
একই পণ্য, মুদ্রা, বা অন্য কোন সম্পদ বিভিন্ন বাজারে সেই সম্পদের মূল্যের পার্থক্যের সুবিধা নেওয়ার জন্য ক্রয় ও বিক্রয় করে এর ভ্যালু বা মূল্যের পরিবর্তন হয়। এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারবেন।
AI টেকনোলজি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই জানে না এর ব্যবহার। কীভাবে একে ব্যবহার করে নতুন ব্যবসা শুরু করা যায়, ব্যবসায় পরিবর্তন আনা যায়, আরও লাভবান হওয়া যায় অথবা কোথায় বিনিয়োগ করতে হবে ইত্যাদি।
তাই আজ বিজনেস আইডিয়ার পরিবর্তে, সার্ভিস বিজনেস নিয়ে কথা হবে।
GPT-3 Open AI
ওপেন এআই সহজে, কম সময়ে এবং ফ্রিতে যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে আপনি ব্যবসার জন্য এআই তৈরি করে সার্ভিস বিজনেস হিসাবে বিক্রি করতে পারবেন।
এর জন্য তিনটি জিনিস প্রয়োজন
-
- যে AI ব্যবহার করবো
-
- যে সার্ভিস দেওয়া হবে
-
- যে কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হবে
উদাহারণ-০১
আমরা ব্যবহার করছি একই কোম্পানির GPT-3 API। এরা তাদের ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল আমাদের নিজেদের অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহার করতে দিবে। যেটা আমাদের নিজেদের AI সিস্টেম তৈরির জন্য সাহায্য করবে।
যেহেতু এটি মানুষের মতো কথা জেনারেট বা তৈরি করে তাই আমরা এটি ব্যবহার করবো AI চ্যাট বট তৈরি করবো।
কোম্পানির উদাহরণ হিসেবে আমরা নিচ্ছি Best Buy। তাদের অনেক বড় সাপোর্টিং টিম রয়েছে যাদের সাথে আমরা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারি কাস্টমার সার্ভিসের জন্য। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখানে সময় বেশি নষ্ট হয়।
GPT আপনার অর্ডারের ডিটেলস চেক করে আপনার প্রয়োজনীয় সার্ভিসের প্রতিটি ধাপ কম সময়ে সহজে নিজেই করে দিবে।
আমাদের এই সিস্টেমটির মাধ্যমে তাদের সাপোর্টিং টিম আরো দ্রুত কাস্টমার সার্ভিস দিতে পারবে। একই সাথে তাদের খরচ কমবে এবং কোম্পানির অবস্থানের ইতিবাচক পরিবর্তন হবে।
আর আপনি যদি আপনার সার্ভিস সিস্টেম বা আইডিয়ার মাধ্যমে কোনো কোম্পানির মিলিয়ন ডলার বাঁচাতে সক্ষম হন, তাহলে খুব সহজেই এই সার্ভিসটির বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
এটা শুধুমাত্র টেক্সট চ্যাট এর ক্ষেত্রে নয়, ফোন সার্ভিসের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে পারি। ভয়েস ওভার কোম্পানি Fliki যুক্ত সহজেই টেক্সটকে ভয়েসে রূপান্তরিত করতে পারবেন। একই সাথে অ্যাক্সেন্ট, স্পিড এবং ভয়েসের প্রকৃতিও কাস্টমাইজড করতে পারবেন।
উদাহরণ-০২
এর জন্য প্রয়োজন:
-
- একটি Niche বের করা
-
- সাথে একটি AI সার্ভিস তৈরি করা
-
- এবং একটি কোম্পানির কাছে সেটি বিক্রি করা
যার মাধ্যমে তারা তাদের কাস্টমার সার্ভিস আরো উন্নত করতে পারবে।
UI & UX
UI এবং UX ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের ব্র্যান্ড ইমেজকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলে ধরা যায়। যার মধ্যে রয়েছে ওয়েবসাইট ডিজাইন, সহজে ব্যবহারে নিশ্চয়তা এবং ইউজার এক্সপেরিয়েন্স বা ব্যবহারের অভিজ্ঞতা।
এর জন্য আমাদের দরকার চারজন ব্যক্তি। AI ডেভেলপার, UI/UX ডেভেলপার, একজন গ্রাফিক ডিজাইনার এবং একজন স্ট্র্যাটেজি প্ল্যানার যার মাধ্যমে ক্লাইন্ট খুঁজে পাওয়া যাবে।
উদাহরণস্বরূপ আমরা নিতে পারি একটি Prayer বা প্রার্থনা জেনারেটর ওয়েবসাইট। যেখানে একটি ইনপুট চ্যাটের মাধ্যমে একটি ল্যান্ডিং পেজ ওয়েবসাইট থাকবে। এবং প্রয়োজন অনুযায়ী প্রার্থনা জেনারেট হবে।
যেমন হয়তো কেউ এমন একটি প্রার্থনা চায়, যেটা হবে কাছের কোনো বন্ধুর জন্য। যে বন্ধু কোনো একটি সমস্যায় ভুগছে। আপনি এটি ইনপুট চ্যাটে দেওয়ার সাথে সাথে অটো একটি প্রার্থনা টেক্সট আকারে তৈরি হবে।
আপনি চাইলে সেটিকে সংক্ষিপ্ত করতে পারেন বা আরো সহজ করতে পারেন। অর্থাৎ আপনার ইচ্ছে মতো কাস্টমাইজ করতে পারবেন।
এটা যেকোনো চার্চ বা পাদ্রীর কাছে আপনি সেল করতে পারেন। একই সাথে মাসিক সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে কাস্টমাইজ করেও পাঠাতে পারেন। অর্থাৎ আপনি বিভিন্ন ভাবে আপনার এই সার্ভিস সিস্টেমটি ব্যবহার করতে পারেন।
তবে এটি যে Chat GPT-এর মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে, তা আপনার অবশ্যই জানাতে হবে।
AI প্রতি মুহূর্তে আমাদের জীবন এবং কর্মক্ষেত্র পরিবর্তিত করে দিচ্ছে। কত দ্রুত আপনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন তার উপর নির্ভর করবে আপনার সফলতা। কেননা এর সম্পর্কে জানা অসম্ভব কিছু নয়। তাই যত কম সময়ে খাপ খাইয়ে নিজের বিজনেসে এর ব্যবহার করতে পারবেন, অথবা একে ব্যবহার করে নিজের সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাবেন; তত ভালো ভাবে ভবিষ্যতে নিজের দৃঢ় অবস্থান তৈরি করতে পারবেন।