William Henry Gates the III:
জ্বি হ্যাঁ বিল গেটস। তার ডেইলি রুটিন জানার আগ্রহ আমাদের কার নেই?
তাই এই আর্টিকেল টি বিল গেটসের ডেইলি রুটিন নিয়ে। কিন্তু আপনারা জানেন কি যে, বিল গেটস যদি এই পৃথিবী তে অবস্থানরত প্রত্যেক মানুষ কে ১০$ করে দান করে থাকে তাও তার কাছে ৩০ বিলিয়ন থেকে বেশি ডলার থাকবে।
Social security administration of আমেরিকা এর মতে, একজন সাধারণ ব্যাচেলর ডিগ্রিধারী আমেরিকান তার জীবদ্দশায় 2.2 মিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে। যা বিল গেটস এতটুকু পরিমান ডলার প্রতি দেড় ঘন্টায় আয় করতে পারে।
তাই অনেক গবেষনা করার পর আমরা আপনাদের কাছে এই অন্যতম একজন সফল ব্যক্তির জীবনের প্রতিদিনের রুটিন নিয়ে আর্টিকেলটি তুলে ধরছি যা আপনাদের কাছে হতে পারে অনেক শিক্ষনীয়। এর সাথে আমরা তার সম্পর্কে আরও অভাবনীয় কিছু facts এবং তার বই পড়ার কিছু টেকনিক ও শেয়ার করব এই আর্টিকেলটি তে। তাই আর্টিকেলটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়বেন এবং আশা করি সেই সাথে আপনারা অনেক কিছু শিখতেও পারবেন।
যদি বিল গেটস কাজের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ট্র্যাভেল না করেন তখন তিনি রোজ সকাল ৭ টায় যুক্তরাষ্ট্রের মারিনা ওয়াশিংটন এ নির্মিত নিজের ৬৬০০০ স্কয়ারফুট, ১২৭ মিলিয়ন ডলারে নির্মিত বাসায় নিজের ৭ ঘণ্টার ঘুম পূরণ করে উঠে। কারণ তিনি মনে করেন যে আমাদের ভাল ও ক্রিয়েটিভ চিন্তা ভাবনার জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ ঘন্টা ঘুমোতেই হবে।
কিন্তু এটা ভুলে গেলে চলবে না নিজের ইয়াং এইজে, Microsoft এর শুরুর দিন গুলোর সময় বিল গেটস নিজের ঘুম অনেক বেশি ত্যাগ দিয়েছে, সেই সময়ে তিনি কাজ করতে করতে নিজের ডেস্কেই ঘুমিয়ে যেতেন আর উঠে আবার কাজ করা শুরু করে দিতেন। এমনকি তিনি বলেছেন, “আমি আমার 20’s এ কখনও একটি দিন ও ছুটি নেয়নি। যখন আমি আমার 20’s এবং 30’s এ ছিলাম তখন আমার পুরো মনোনিবেশ শুধুমাত্র আমার কাজেই ছিল। আমি সে সময়ে ছুটির দিনগূলোতেও কাজ করেছি এবং কখনও ভেকেশান এ ঘুরতেও যাইনি, আমি সবসময় আমার অফিসে সবার আগে যেতাম এবং অফিস থেকে বের হওয়ার সর্বশেষ মানুষ টিও আমিই ছিলাম।”
ঘুম থেকে উঠার পর বিল গেটস সসর্বপ্রথম নিজের বাড়িতে নির্মিত জিম এই physical exercise সেড়ে নেন। এবং exercise বা cardio করার সময়ই তিনি কোন educational ভিডিও বা ডকুমেন্টারি দেখেন। তারমানে সে একই সাথে তার বডি ও মাইন্ড কে ট্রেইন করে থাকেন। এরপরেই গেটস নিজের shower নেয়ার কাজ টি সেড়ে ফেলেন।
তারপর তিনি wall street journal, The new year times, the Washington post ইত্যাদি নিউজপেপার পড়ে সমসময়কার বিশ্ব চলমান সকল তথ্য সম্পর্কে অবগত হন। তার কিছুক্ষণ পরেই তিনি সরাসরি নিজের কাজের উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু থামেন, আপনি এখন অবশ্যই ভাবছেন যে, গেটস ব্রেকফাস্ট কখন করল? তাহলে আপনাকে জানিয়ে রাখি যে, গেটসও ইলন মাস্কের মত সকালের নাস্তা স্কিপ করে যান, কিন্তু কখনও কখনও যদি তার ইচ্ছা হয় বা প্রয়োজন পরে তাহলে তিনি তার ফেভারিট ব্রেকফাস্ট হিসেবে কোকোয়া পাফড সিরিয়াল খাওয়াই পছন্দ করেন।
এরপর ওয়ার্ক স্পেসে পৌছানোর পর দেখা যায় গেটস এর বেশির ভাগ ওয়ার্কিং আওয়ার মিটিং এটেন্ড করতে, জরুরি ইমেইল পড়তে আর একাধিক রিসার্চ টিমের সাথে আইডিয়া ও রেজাল্ট এনালাইসিস করতেই পার হয়ে যায়। যার মধ্যে তার ও তার সাবেক স্ত্রীর গেটস অ্যান্ড মালিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এর বিলং ও রয়েছে।
আপনি অবশ্য গেটস এর চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনের কথা শুনেছেন। কিন্তু ফোর্বস এর মতে বিল গেটস এখন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি থাকতেন যদি তিনি ১৯৯৪ থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ বিলিয়ন ডলারস শুধু রিসার্চ ও চ্যারিটি তে ডনেট না করতেন।
যাই হোক বিল গেটস অন্য সব বিজনেসম্যান দের মত শুধুমাত্র টাকাকেই গুরুত্ব দেয় না বরং তিনি তার সময়কে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। এর জন্য বিল গেটস এর পুরোটা সময় আলাদা করা রয়েছে আলাদা আলাদা কাজের জন্য, তার সব কাজের জন্য আলাদা আলাদা এই নির্দিষ্ট সময় ভাগ করাকে টাইম ব্লকিং বলে। আর এই টাইম ব্লকিং কে ইলন মাস্ক ও তার জীবনে follow করে থাকেন।
এখন এই স্কেডিউল এর মধ্যেই এমন সময় এসে যায় যখন বডি কে এনার্জির প্রয়োজন পরে আর তখনই আসে লাঞ্চ টাইম। দেখা যায় লাঞ্চে বিল গেটস নিজের পছন্দের বিভিন্ন মিল নিয়ে থাকেন। তবে অনেক ইন্টারভিউ তেই তিনি বলেছেন যে চিজ বার্গার তার সবচেয়ে প্রিয় মিল।
যখন ইন্টারভিউ তে তাকে আরও প্রশ্ন করা হয় যে কোন খাবারটি তিনি তার সাথে একটি ডেজার্টেড আইল্যান্ড এ নিয়ে যেতে পছন্দ করবেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “চিজ বার্গারস।” যাই হোক সারাদিনের কাজ শেষে বিল গেটস যখন বাসায় আসে তখন তিনি তার পরিবারের সাথে সময় কাটাতে পছন্দ করেন। কিন্তু তার সন্তানরা বড় হওয়ার পর সবাইকে খুব কমই এক সাথে পান গেটস আর এটি শুধু উইকেন্ডেই হয়ে থাকে এখন।
গেটস এর হবির মধ্যে রয়েছে বই পড়া ও টেনিস খেলা। কারণ তিনি টেনিস খেলতে অনেক পছন্দ করেন, এমনকি তিনি টেনিসের অনেক বড় ফ্যান৷ এর জন্য তিনি তার বাড়িতে একটি টেনিস কোর্ট ও বানিয়ে রেখেছেন। আর ২০১৮ তে তিনি ফ্যামাস টেনিস তারকা রজার ফেদেরারের সাথে খেলার সৌভাগ্য অর্জন করেন।
আর তার বই পড়ার অভ্যাসের কথা কে না জানে? গেটস ট্রাভেল করার সময় আর যখন বাসায় থাকেন তখন বেশিরভাগ সময় বই পড়েন। আর তার প্রত্যেক সপ্তাহে একটা বই ও বছরে ৫০ টি বই পড়ার গোল থাকে। সেই সাথে তিনি বই পড়া সম্পর্কিত এই ৩ রুল ফলো করেন। আর তিনি বলেন, যদি সম্ভব হয় তাহলে বাকি সবাইও যেন এই রুল গুলো ফলো করে।
রুল নম্বর 1ঃ Take notes
রিডিং এর সময় নোট করা থাকলে এরপরে আবার আমাদের পরবর্তীতে পড়তে অনেক সহজ হয়।
রুল নম্বর 2ঃ Finish the book
আপনি যেই বই পড়া শুরু করেন না কেন, তা অবশ্যই শেষ করবেন। আপনি কখনও মাঝ পথে ছেড়ে দিয়েন না। কারণ অনেক বই ই শুরুতে বোরিং লাগলেও ধীরে ধীরে লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে পারবেন।
রুল নম্বর 3ঃ Read minimum 1 hour
গেটস বলেন আপনি যদি কোন বই থেকে বিশেষ কোন জ্ঞান নিতে চান তাহলে অবশ্যই বইটিকে দিনে ১ ঘ্ন্টা করে পড়বেন৷ আর তিনি নিজেও সন্ধ্যা কিংবা রাতে অবশ্যই ১ ঘন্টা করে বই পড়েন। কিন্তু আপনি জানেন কি 100 and 1.8 বিলিয়ন ডলারের অধিকারী বিশ্বের অন্যতম ধনী বিল গেটস রাতে ডিনারের পর নিজের প্লেট নিজেই ধৌত করেন। এখন সব কিছু শেষ করে, বই পড়ার পর গেটস রাত ১২ টায় ঘুমোতে চলে যান। যেন পরের দিনটি তিনি একটি ফ্রেশ ও ক্রিয়েটিভ মাইন্ড দিয়ে শুরু করতে পারেন।