মার্ক জাকারবার্গের পরবর্তী ট্রিলিয়ন $$ কেলেঙ্কারি, ১ম ট্রিলিয়নিয়ার হবে?

করোনা মহামারীর সময়, মার্ক জাকারবার্গের Net Worth 140 বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল এবং Meta প্ল্যাটফর্মের মার্কেট ক্যাপ এক ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু বর্তমানে মার্ক জাকারবার্গের Net Worth 40 বিলিয়ন ডলারও নয়। অন্যদিকে Meta প্ল্যাটফর্মের Net Worth 670 বিলিয়ন ডলার কমে গেছে।

মার্ক জাকারবার্গ যখন 1 বিলিয়ন ডলার দিয়ে Instagram কেনে, তখন অনেকেই এর বিরোধিতা করেছিল। তাদের ধারণা ছিল, একটি সাধারণ ফটো শেয়ারিং অ্যাপ এর পেছনে এত অর্থ ব্যয় করা বোকামি। কিন্তু সেই ইনস্টাগ্রামের বর্তমান মূল্য 100 বিলিয়ন ডলার পার করেছে।

আবার, 19 বিলিয়ন ডলার দিয়ে WhatsApp কেনার সময়ও মার্কের বিজনেস প্ল্যান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। অথচ বর্তমান বিশ্বে WhatsApp ছাড়া কোনো কাজ করাই অসম্ভব মনে হয়।

২০১৪ সালে মার্ক জাকারবার্গ 2 বিলিয়ন ডলার দিয়ে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কোম্পানি Oculus কিনে ফেলে। তাহলে কি এই প্রজেক্টের মধ্য দিয়ে মার্ক জাকারবার্গ পৃথিবীর প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার হবেন? না কি আবারো, ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। 

Virtual Reality

এজন্য প্রথমেই আমাদের জানতে হবে Virtual Reality বা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কী? 

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো একটি আর্টিফিশিয়াল বা কৃত্রিম ডিজিটাল পরিবেশ যেটা আপনার বাস্তবতাকে রিপ্লেস বা বাস্তব পরিবেশের জায়গা নিয়ে নিতে পারে। 

অর্থাৎ, আপনি একটি ভিন্ন পরিবেশে শারীরিকভাবে না গিয়েও সেই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন। এবং আপনার মনে হবে যে আপনি আসলে সেই জায়গা বা পরিবেশটাতেই রয়েছেন। এটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে এতটাই বাস্তব মনে হবে যে, আপনি কিছুক্ষণের জন্য হয়তো বাস্তবতা এবং কৃত্রিমতা আলাদা করতে পারবেন না।

Meta প্ল্যাটফর্ম, আরো বেশি পরিমাণ মানুষকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির এই অভিজ্ঞতা অর্জন করাতে চাচ্ছে। 

Augmented Reality

এরপর আসছে Augmented Reality. বাস্তব জগতের যেকোনো উপাদানকে ডিজিটাল ইমেজ, অডিও  এবং সেন্সর এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।

এটি মূলত আপনাকে বুঝতে সাহায্য করবে, যেকোনো জিনিস আপনার জীবনে আসার পর আপনার বাস্তবতা কীভাবে পরিবর্তিত হবে। 

যেমন ধরুন, আপনার একটি টেবিল প্রয়োজন। আপনি টেবিলটি আনার পর সেটা আপনার ঘরে কেমন লাগবে, আপনি সেটা এই টেকনোলজি ব্যবহার করে দেখতে পারবেন। বর্তমানে Snapchat, আইফোনে এর ব্যবহার রয়েছে।

এতে আপনার সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়। এর সবচেয়ে বেশি ব্যবহার রয়েছে Navigation, Retail এবং Advertising-এ। ইনস্টাগ্রামে AR ফিল্টার ইউজ করা হয়। করোনার লকডাউনে এটি  জনপ্রিয় ট্রেন্ড হিসেবে ব্যবহার রয়েছে। যেমন আপনি AR ফিল্টার ইউজ করে দেখতে পারেন, কক্সবাজারে থাকলে আপনার ছবি কেমন হতো। TikTok-এ একটি AR ফিল্টার আছে। যেখানে মনে হবে যে, আপনি আসলে প্যারিসে আছেন।  

Mixed Reality 

এটি Augmented Reality-এর অ্যাডভান্স লেভেল। অর্থাৎ আপনি যেমন ভার্চুয়াল দুনিয়ার কোনো একটা উপাদান বাস্তব দুনিয়াতে আনতে পারবেন, একইভাবে আপনি তার সাথে যোগাযোগও করতে পারবেন। এখন আপনি শুধু টেবিল আনতেই পারবেন না, একইসাথে টেবিলের কালার পরিবর্তন করতে পারবেন, টেবিলের উপর বই রেখে দেখতেও পারবেন সেটা কেমন দেখায়। 

মূলত আরো বেশি ইন্টারেক্টিভ এবং অ্যাডভান্স লেভেলের হবে এই এটি। Meta প্ল্যাটফর্ম বর্তমানে Mixed Reality-এর উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। 

কিন্তু, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নিয়ে সবার মাঝে এত বেশি আগ্রহ কেন?

আমাদের চিন্তার প্রক্রিয়া দুটি- Abstract এবং Special.

Abstract Thinking

Abstract thinking বা বিমূর্ত চিন্তাভাবনা হলো আমরা যা অবজারভ করছি তার বাইরে ধারণাগুলো বিশ্লেষণ করা। আমরা যাই চিন্তা করি তা প্রথমে আমাদের ব্রেন গ্রহণ করে এবং আমরা সেই অনুযায়ী চিন্তা করি। এর কোনো বাহ্যিক রূপ নেই। 

Special Thinking

Special Thinking হলো ভিজ্যুয়াল চিন্তা। এর বাহ্যিক রূপ আছে, এখানে আমরা সবকিছু ছবি বা ইমেজ আকারে চিন্তা করি।

আমাদের স্পেশাল মেমোরি 50 মিলিয়ন বছর ধরে ডেভেলপ হচ্ছে। আর ভার্চুয়াল রিয়েলিটি টেকনোলজি স্পেশাল মেমোরি অংশকেই ব্যবহার করে। মার্ক জাকারবার্গ চাচ্ছেন, ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জগতেই মানুষ বেশি সময় ব্যয় করুক। কাজ, মিটিং, আড্ডা সবকিছুই যেনো হয় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কেন্দ্রিক। এই এক্সপেরিয়েন্সকে আরও বাস্তব করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের টেকনোলজি যুক্ত করতে হবে। তাই তিনি এর পেছনে বিশাল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছেন। 

যেমন, আমরা মিটিং বা যেকোনো কাজে Zoom-এ যে অবতারগুলো ব্যবহার করি, সেগুলো এখন আরো বেশি রিয়ালিস্টিক মনে হবে। অর্থাৎ আমাদের কাছে মনে হবে যে, সত্যিকারের মানুষটিই আমাদের সামনে বসে আছে। সাথে যুক্ত হবে স্পেশাল অডিও যাতে করে ভয়েস আর রোবটিক মনে না হয়। Meta-এর সাথে Tesla, Amazon, Apple ইত্যাদি কোম্পানিও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পিছনে সময় এবং অর্থ ব্যয় করছে।  

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার 

বর্তমান ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। প্রথমেই রয়েছে ডাক্তারদের জন্য মেডিকেল সেক্টরে। সার্জারি শিখতে যেসব ডাক্তাররা ট্রেনিং নিচ্ছেন, তাদের ট্রেনিংয়ে আমরা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করতে পারি। তাহলে আরো বাস্তবসম্মত ভাবে তারা ট্রেনিং নিতে পারবেন। 

একইসাথে শিক্ষাক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্থাৎ আপনি স্টুডেন্টদেরকে Real-life প্রবলেম এর সাথে পরিচয় করাতে পারবেন। তাদের শিক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি আরো বেশি বাস্তবিক এবং কাজের মনে হবে। পাশাপাশি, পড়াশোনা তখন মজার এবং আকর্ষণীয় হবে। বেশ আগ্রহ নিয়ে তারা পড়াশোনা করতে পারবে।

যদি মার্ক জাকারবার্গ সফল হয়, তাহলে তিনি হতে পারেন পৃথিবীর প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার। কিন্তু যদি এটি ব্যর্থ হয়, তাহলে তার কোম্পানির যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষতি হবে। কারণ আমরা দেখেছি, ২০২২ সালে Meta প্লাটফর্মে এর মধ্যেই 9.4 বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।

তাদের রিয়েলিটি ল্যাব ইউনিটের রেভিনিউ ৫০ পারসেন্ট কমে গিয়েছে। তাদের যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে, সেই পরিমাণ রেভিনিউ এবং প্রফিট হচ্ছে না। মার্ক জাকারবার্গ ২০২৩ সালে Meta-এর পিছনে আরো বেশি অর্থ ব্যয় করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

Share:

More Posts

Best Uses of LinkedIn Search – Part 1

বিক্রয়কর্মী হিসাবে, আপনার কাজ সম্ভাব্য কাস্টোমার খুঁজে বের করা এবং সেগুলোকে লিড হিসেবে নির্বাচন করা। এক বিলিয়ন সদস্যসহ, লিংকডইন আপনার মাছ ধরার জন্য মাছে ভরা

LinkedIn Marketing

‘বাস্তবে অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী আছেন যারা কোল্ড কল ঘৃণা করে এবং তাদের উত্তর দিবেন না। লিঙ্কডইন হল তাদের কাছে পৌঁছানোর চাবিকাঠি।’   সম্প্রতি একটি বৈশ্বিক

কিভাবে লিঙ্কডিন (Linkedin) ব্যাকগ্রাউন্ড/ব্যানার ইমেজ তৈরি করবেন?

সুপারিশকৃত ছবির আকার – ১৫৮৪ x ৩৯৬ আপনার প্রোফাইল ছবির পিছনে আপনার লিঙ্কডইন ব্যাকগ্রাউন্ড / ব্যানার রয়েছে, যা লিঙ্কডইন প্রোফাইলগুলির সর্বাধিক ব্যবহৃত অংশগুলির মধ্যে একটি। 

লিঙ্কডিন (Linkedin) প্রোফাইল ফটো টিপস সম্পর্কে জানতে চান!

আপনার পিছনে একটি সমতল পটভূমি রয়েছে। এটি আপনাকে বিস্তৃত করবে, যেখানে একটি বিশৃঙ্খল পটভূমি আপনার থেকে ভিউয়ারকে বিভ্রান্ত করবে। যদি সম্ভব হয় তবে লিঙ্কডিন ব্যাকগ্রাউন্ডের

Send Us A Message